আন্তর্জাতিক নারী দিবসের উৎপত্তি
১৮৫৭ সালে মজুরি বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা ও কাজের অমানবিক পরিবেশের প্রতিবাদ জানাতে নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সূতা কারখানার শ্রমিকরা।সেই মিছিলে সরকারি বাহিনী তাদের উপর চালায় বর্বর নির্যাতন।১৯০৯ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনের আয়োজন করা হয় । উক্ত সম্মেলনে যোগদান করেন জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন।১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় ২য় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। সম্মেলনে ১৭ টি দেশের ১০০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। এ সম্মেলনে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, ১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হবে।
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ র্যালী, শোভাযাত্রা, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, আলোচনা অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে।২০২২ সালে জাতিসংঘ দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে, “নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ”। এই মূল প্রতিপাদ্যের আলোকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে, “টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগন্য”।বাংলাদেশেও বিভিন্ন নারী সংগঠন ছাড়াও সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠন এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করা হয়।
প্রত্যেকটি নারী কারো না কারো মা, বোন, স্ত্রী অথবা কন্যা ।প্রতিটি ঘরেই নারীর বসবাস, সহাবস্থান ।অথচ অনেকে এটা গভীর ভাবে উপলদ্ধি করে না।যার ফলে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত হয় নারী।নিজ ঘর এবং ঘরের বাইরেও।উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সর্বস্তরে, পুরুষের পাশাপাশি নারীর সম অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবী। তা না হলে সমাজ ও রাষ্ট্র এগুতে পারবে না ।নারী ও পুরুষ এরা একে অপরের পরিপূরক।কাউকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই।নারী ও পুরুষের পারস্পারিক সহাবস্থান,সম অধিকার নিশ্চিত হলেই দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে বহুদূর। এটাই হোক এবার নারী দিবসের প্রত্যাশা ।
বিশ্বের অনেক দেশে ৮ মার্চকে সরকারি ছুটি হিসেবে পালন করা হয়। আবার কোন কোন দেশে শুধুমাত্র নারী কর্মীদের জন্য এ দিনটিতে ছুটির বিধান রাখা হয়েছে।
স্থান, কাল পাত্র ভেদে বিশ্বের একেক জায়গায় এক এক লক্ষ্য নিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।কোন কোন দেশে নারীর রাজনৈতিক, সামাজিক ও আর্থিক বিষয়টি গুরুত্ব পায়। আবার কোন কোন দেশে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান এর প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়।
বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় দিবসটিকে ঘিরে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল পাঁচ জন করে জয়িতাকে প্রতি বছর পুরস্কৃত করে আসছে।
No comments